বাবা: "জীবনের আলোয় ভরা ছায়া"
আমার আব্বুর নাম এস. এম. রফিকুল ইসলাম। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক, কিন্তু আমার চোখে তিনি শুধুই একজন শিক্ষক নন—তিনি একজন পথপ্রদর্শক, একজন আদর্শ, একজন বটবৃক্ষ। তাঁর জীবনযাপন সাদাসিধে, নিরহঙ্কার এবং সরলতা দিয়ে ভরপুর। যে মানুষটি নিজের জীবনে জাঁকজমক বা বাহ্যিক চাকচিক্য পছন্দ করেন না, কিন্তু হৃদয়ে ধারণ করেন অগাধ শান্তি, স্থিরতা এবং ধর্মভিরুতা।
আব্বু একজন ধর্মভীরু মানুষ, ইসলামি মাইন্ডসেট তাঁর প্রতিটি চিন্তায়, তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয়। নামাজ, রোজা, কুরআন পাঠ কিংবা সাধারণ নৈতিক শিক্ষা—সবকিছুর মধ্যে তিনি শুধু নিজেই মনোযোগী নন, বরং আমাদেরও সেই পথে গড়ে তুলেছেন ধৈর্য, প্রেম ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে। তাঁর আচরণেই আমরা শিখেছি, ইসলাম শুধুই একটুকু নামাজ নয়, বরং একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের চরিত্র গঠনের মূল ভিত্তি।
একজন বাবা সন্তানের জীবনে কী ভূমিকা রাখে—তা বোঝা যায় তখনই, যখন সেই বাবা একজন শিক্ষিত, ধর্মভীরু, এবং আদর্শবান মানুষ হন। আব্বুর মত একজন মানুষ থাকলে সন্তান ভুল পথে যাওয়ার সুযোগই পায় না। কারণ তাঁর উপস্থিতি একদিকে যেমন ভয় আর শ্রদ্ধার মিশেলে সন্তানের চরিত্রে শুদ্ধতা আনে, অন্যদিকে তাঁর ভালোবাসা, পরামর্শ এবং প্রজ্ঞা সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে।
তিনি আমাদের শুধু পরীক্ষায় ভালো ফল করতে বলেননি, আমাদের বলতেন—মানুষ হতে, নীতিবান হতে, সৎ হতে, এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে। তিনি আমাদের জীবনের মানে বোঝান, জানিয়ে দেন—সত্যিই সফল হতে চাইলে, নিজের ভেতর আলোকিত একটা চরিত্র গড়ে তুলতে হবে।
আমার আব্বুর মতো বাবারা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য আশীর্বাদের মতো। তাঁরা সন্তানের কাছে শুধু একজন উপার্জনকারী নন, বরং নীরব এক প্রেরণা, যে কখনো সন্তানকে পথ হারাতে দেন না, যিনি সামনে থেকে না হোক, দূর থেকেই সবসময় সন্তানের পাথেয় হয়ে থাকেন।
বাবা মানেই আড়ালের একজন যোদ্ধা,
যিনি নিজের ক্লান্তি গোপন করে সন্তানকে হাসতে শেখান।
বাবা মানেই আকাশের মতো বিশাল, যিনি সব ঝড়ের মধ্যে ছায়া দেন।
আমি গর্বিত, আমার বাবা এস. এম. রফিকুল ইসলাম। তিনি আমাকে কেবল বড় করেননি, আমাকে গড়ে তুলেছেন। তাঁর আদর্শ, বিশ্বাস এবং নৈতিকতা আমার সারা জীবনের সম্পদ।